বিশেষ প্রতিনিধি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বাসচাপায় প্রকৌশলী মইদুল ইসলাম সিদ্দিক শুভ (৩৭) নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাসটির চালককে আটক করেছে র্যাব। চালকের নাম মাহমুদ হাসান। শনিবার সকালে বরিশাল থেকে র্যাব-৮ তাকে আটক করে। বাসচাপায় নিহত মইদুল ইসলাম সিদ্দিক শুভ সিভিল এভিয়েশনের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে চাকরির পরীক্ষা ছিল শুভর স্ত্রী ইরানি চৌধুরীর। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় তাঁকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বটি নিয়েছিলেন শুভ। কাওলা এলাকার বাসা থেকে বেরিয়ে মোটরসাইকেলে স্ত্রীকে বনানীতে নিরাপদে পৌঁছে দেন তিনি। এর পর আবার বাসায় ফিরছিলেন। তার আগেই রাইদা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের চাপায় মইদুল প্রাণ হারান। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি মোটরসাইকেলসহ তাঁকে ছেঁচড়িয়ে নিয়ে যায় প্রায় ১৫ ফুট। গাড়ির সামনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।গতকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটি বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের টিনের নিরাপত্তা বেষ্টনী (অস্থায়ী) ভেঙে ভেতরে চলে যায়। ওই অবস্থায় বাস রেখে পালিয়ে যায় চালক ও তার সহকারী। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ বাসটি জব্দ করে।
নিহত মইদুল ইসলামের স্বজনরা জানান, তাঁর গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলা শহরের নিশিন্দারায়। বাবার নাম এ কে এম সামছুদ্দিন সিদ্দিক। দুই ভাইবোনের মধ্যে মইদুল ছোট। তাঁর একমাত্র বোন কানাডা প্রবাসী। মইদুল ২০১২ সাল থেকে সিভিল এভিয়েশনে কর্মরত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাইদা পরিবহনের বাসটির ফিটনেস নেই। ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর পর আর ফিটনেস করানো হয়নি। এ ছাড়া ট্যাক্স, টোকেন ও রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের নভেম্বরে। রাইদা পরিবহনের বাস পোস্তগোলা থেকে উত্তরা খালপাড় পর্যন্ত চলাচল করে। বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত এই সড়কে বাসচালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। গত আট বছরে আড়াই শতাধিক মানুষ এই সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।